‘বিনা কারণে আমার বাবাকে ৮০ দিন জেলহাজতে রাখা হয়েছে। তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি। বাবা চক্রান্তের শিকার। দুদক কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও তারা কোনো সাড়া দিচ্ছেন না।’

মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বিএনএস অব কোম্পানিজের চেয়ারম্যান এম এন এইচ বুলুর মেয়ে নুসরাত লায়লা বুলু। তিনি এই কোম্পানির পরিচালক।

নুসরাত লায়লা বুলু বলেন, ‘একই তথ্যের ভিত্তিতে একই মামলা দিচ্ছে দুদক ও সিআইডি। কোনো ডকুমেন্ট দেখাতে পারেনি। আমার বাবা মানি লন্ডারিংয়ে যুক্ত নয়। বিনা কারণে তিনি জেল খাটছেন। অবিলম্বে তার মুক্তি চাই।’

তিনি বলেন, ‘আমার চাচা আমির হোসেন আমির ফুডসের যে ব্যবসা শুরুর জন্য তার (আমির) ব্যাংক অ্যাকাউন্টে নমিনি হিসেবে বাবাকে রেখেছিলেন। তবে সেটার জন্য তারা কোনো পাটনারশিপে ব্যবসা শুরু করেননি। তার অ্যাকাউন্টে নমিনি দরকার ছিল, সেখানে তাকে নমিনি বানিয়েছেন। সেখানে বাবার কোনো সইও নেই। আমির ফুডসের ব্যবসায় তিনি জড়িত নন।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জাবাবে নুসরাত বলেন, এই ঘটনার পিছনে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা নেই। একই তথ্য দিয়ে বারবার মামলা করা হয়েছে।
কোনো আইনগত ব্যবস্থা নিবেন কি না জানতে চাইলে বুলুর মেয়ে জানান, ব্যাংক স্টেটমেন্টে বলা হয়েছে আমার বাবা সেখানে কোনোভাবেই জড়িত নয়। আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিব। আমার বাবা আগে বের হোক। সে বের হলে এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনএস গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক মোকসুদুজামান বলেন, ব্যাংক থেকে নমিনির যে একটি ফর্ম থাকে, সেখানে নমিনির সই নেই। একই অফিসে যেহেতু বসেন, অফিস থেকে একটা ছবি সংগ্রহ করে নিয়েছেন। সেই ছবি দিয়ে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে।’

এর আগে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান বুলুর স্ত্রী হোসনে আরা নাজ। তিনি বলেন, এম এন এইচ বুলু গত ১৬ নভেম্বর থেকে জেলহাজতে। আমির ফুডস নামের একটি প্রতিষ্ঠানের রপ্তানির বিপরীতে সরকারি প্রণোদনার অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে বনানী থানার মামলায় এম এন এইচ বুলুকে ১নং আসামি আমির হোসেনের ব্যাংক হিসাবের নমিনি দেখিয়ে ৩নং আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। ওই ব্যাংক হিসাবের নমিনি ফর্মে বুলুর কোনো সই নেই। এ প্রতিষ্ঠানের মালিক আমির হোসেন। যিনি বুলুর প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অবস্থায় গোপনে এমন কাজ করেছেন।

তিনি বলেন, বিষয়টি ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের দালিলিক কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে বুলুর নাম এজাহার থেকে বাতিলের জন্য অবহিতপূর্বক ২০১৭ সালের ২২ জানুয়ারি আমির ফুডসের সঙ্গে বুলুর কোনো সম্পৃক্ততা এবং ব্যাংকে তার বিরুদ্ধে কোনো প্রকার অভিযোগ বা দাবি দাওয়া নেই—মর্মে একটি সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়। পরে বিজ্ঞ চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এর বিচারক ওই মামলার চার্জ শুনানিতে ২০১৮ সালের ৫ ডিসেম্বর বুলুর সঙ্গে মামলার কোনো সম্পৃক্তা না পেয়ে অব্যাহতি দেন। তারপরও একই বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন দুটি সংস্থা যথাক্রমে-সিআইডি ও দুদক ২০২০ সালের ১৩ আগস্ট ও ২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বর একই বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে দুটি মামলা করেন। ফলে এখন পর্যন্ত বুলু জেলহাজতে রয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনএস গ্রুপ অব কোম্পানিজের মার্কেটিং ডিরেক্টর বড়ুন চন্দ্র সেন, হাজি আ. সাত্তার, ভাই সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন প্রমুখ।

 

কলমকথা/বি সুলতানা